পিরোজপুর প্রতিবেদক ॥ পিরোজপুরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর- এলজিইডি’র ৩০ কোটি টাকা টেন্ডার নিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবার ব্যস্ততার সুযোগে এ দপ্তরের প্রকৌশলীরা কারসাজি করে ১৪টি টেন্ডার একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানের নামে পাইয়ে দিয়েছেন বলে একাধিক ঠিকাদার লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এমএস আহমেদ স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক মঠবাড়িয়ার পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিউদ্দিন আহমেদ ফেরদৌস একজন অভিযোগকারী।
এমএস লিটন ট্রেডার্সের অন্যতম অংশীদার ও পিরোজপুর সদর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বিপ্লব একই অভিযোগের আরেকজন আবেদনকারী। এরা দু’জনই এলজিইডি’র পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ করে বলেন, ওই দপ্তরে টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম এবং ওই কমিটির সদস্য সচিব ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ এই টেন্ডার কারচুপির সাথে লিপ্ত।
তাদের অভিযোগে প্রকাশ, গত ২৭ এপ্রিল এক বিজ্ঞপ্তিতে বিজেপি প্রকল্পের তিনটি কাজের ও আইবিআরপি প্রকল্পের ১১টি কাজসহ প্রায় ৩০ কোটি টাকার ১৪টি আইডিতে প্রথম টেন্ডার আহ্বান করা হয়। পরবর্তীতে কোন কারণ ছাড়াই উক্ত টেন্ডার নোটিশে আরেকটি সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি জারী করা হয়। এ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ১০ জুন টেন্ডার উন্মুক্তকরণের দিন নির্ধারিত ছিলো। ঠিকাদার কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বিপ্লব লিখিত অভিযোগ এবং মৌখিকভাবে সাংবাদিকদের জানান, তিনি ও অপর অভিযোগকারী রফিউদ্দিন আহমেদ ফেরদৌস ওটিএম মেথডে ১০ শতাংশ নি¤œ দরে উক্ত নির্মাণ কাজের টেন্ডার দাখিল করেন। কিন্তু টেন্ডার কমিটি আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব টেন্ডারপত্র যাচাই-বাচাই নামে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। আবেদনকারীদের অভিযোগে জানা যায়, টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলির দাখিলকৃত বিগত পাঁচ বছরের কাজ সম্পাদনের সনদপত্রগুলোসহ অন্যান্য কাগজপত্র ছাড়াই কোন প্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই আইন বহির্ভূতভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে মোহাম্মদ ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স (প্রাঃ) লিঃ নামে একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানকে এ সকল কাজ দেয়ার জন্য সুপারিশ করে এলজিইডি’র প্রকল্প পরিচালকের অফিসে প্রেরণ করা হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে আবেদনকারীরা উক্ত টেন্ডারগুলো যাচাই-বাছাই করে যোগ্য ফার্ম বা প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়ার জন্য অুনরোধ করেছেন। এ ব্যাপারে পিরোজপুরের এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী সুশান্ত রঞ্জন রায় জানান, তিনি এ ধরণের লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। পুনঃরায় এ টেন্ডার প্রক্রিয়া তিনি পরীক্ষা করে দেখবেন এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। টেন্ডার কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ওই টেন্ডার সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বা তার নেতৃত্বের কমিটি মোটেই দুর্নীতি বা অনিয়মের আশ্রয় নেননি।’
Leave a Reply